বিভিন্ন প্রাণীর বৈশিষ্ট্য ও বাসস্থান এবং পরিবেশে তাদের প্রভাব
অষ্টম শ্রেণির সুপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমাদের ২০২১ সালের ৪র্থ সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট প্রকাশিত হয়েছে। এই সপ্তাহে তোমাদের বিজ্ঞান পাঠ্য বই থেকে বিভিন্ন প্রাণীর বৈশিষ্ট্য ও বাসস্থান এবং পরিবেশে তাদের প্রভাব নিয়ে একটি এ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হবে। তোমাদের জন্য ৮ম শ্রেণির ৪র্থ সপ্তাহের বিজ্ঞান বিষয়ের নির্ধারিত কাজ এর একটি নমূনা উত্তর দেওয়া হল। বিভিন্ন প্রাণীর বৈশিষ্ট্য ও বাসস্থান এবং পরিবেশে তাদের প্রভাব।
২৪ মে ২০২১ তোমাদের জন্য ৪র্থ সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে। এখানে তোমাদের জন্য চারু ও কারুকলা এবং বিজ্ঞান বিষয় থেকে এ্যাসাইনমেন্ট নির্ধারিত হয়েছে।
অষ্টম শ্রেণির ৪র্থ সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট বিজ্ঞান ২০২১
তোমাদের জন্য ৪র্থ সপ্তাহের বিজ্ঞান বিষয়ের বই থেকে প্রথম অধ্যায়ের প্রাণি জগতের শ্রেণি বিন্যাস থেকে নির্ধারিত কাজ-১ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত নির্দেশনা অনুসরণ করে তোমাদের এস্যাইনমেন্টটি লিখতে হবে।
এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের ক্রম: এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ-১
অধ্যায় ও অধ্যায়ের শিরােনাম প্রথম অধ্যায়: প্রাণি জগতের শ্রেণি বিন্যাস
পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত পাঠ নম্বর ও বিষয়বস্তু: পাঠ -১ : প্রাণি জগতের শ্রেণি বিন্যাস, পাঠ ২-৫ : অমেরুদন্ডী প্রাণীর শ্রেণি বিন্যাস, পাঠ ৬-৮: মেরুদন্ডী প্রাণীর শ্রেণি বিন্যাস পাঠ -৯: শ্রেণি বিন্যাসের প্রয়ােজনীয়তা;
এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ:
চিংড়ি, মৌমাছি, ফিতা কৃমি, সাপ, কাক, তারা মাছ, ঝিনুক, রুই মাছ, বিড়াল, হাইড্রা প্রাণীগুলাে থেকে যে কোনাে ৮টির পর্ব, বৈশিষ্ট্য ও বাসস্থান উল্লেখ করে একটি ছক তৈরি কর।
এগুলাের মধ্যে থেকে তােমার পরিচিত প্রাণীগুলাের কিরুপ প্রভাব তােমার জীবনে রয়েছে তা উল্লেখ কর।
সংকেত: ক) প্রভাব নিরূপনে উপকারী ও অপকারী উভয় দিক বিবেচনা করা;
নির্দেশনা: এ্যাসাইনমেন্টটি সম্পন্ন করতে পাঠ্যপুস্তকের প্রথম অধ্যায়ের পাঠগুলাে সমাপ্ত করতে হবে। ছক তৈরির ক্ষেত্রে ক্যালেন্ডারের উল্টোপাতা/পােষ্টার পেপার/চারটি সাদা কাগজ জোড়া দিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
অষ্টম শ্রেণির ৪র্থ সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট বিজ্ঞান এর উত্তর
তোমাদের জন্য নির্দেশনায় উল্লেখিত মূল্যায়ন নির্দেশক ও যথাযথ গাইডলাইন অনুসরণ করে একটি নমূনা উত্তর প্রস্তুত করে দেওয়া হয়েছে। এই অনুচ্ছেদটি পড়ে তোমাদের ৮ম শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ে এ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর লিখে নাও।
চিংড়ি, মৌমাছি, ফিতা কৃমি, সাপ, কাক, তারা মাছ, ঝিনুক, রুই মাছ, বিড়াল, হাইড্রা প্রাণীগুলাে থেকে যে কোনাে ৮টির পর্ব, বৈশিষ্ট্য ও বাসস্থান উল্লেখ করে একটি ছক তৈরি করা হল।
১. প্রাণির নাম: হাইড্রা, র্পবের নাম: নিডারিয়া (এই পর্ব ইতোপূর্বে সিলেন্টারেটা নামে পরিচিত ছিল)
বৈশিষ্ট্য:
১. দেহ দুটি ভ্রুনীয় কোষস্তর দ্বারা গঠিত। দেহের বাইরের দিকের স্তরটি এক্টোডার্ম এবং ভিতরের স্তরটি এন্ডোডার্ম।
২. দেহ গহ্বরকে সিলেন্টেরন বলে। এটা একাধারে পরিপাক ও সংবহনে অংশ নেয়।
৩. এক্টোডার্মে নিডোব্লাস্ট নামে এক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কোষ থাকে। এই কোষগুলো শিকার ধরা, আত্মরক্ষা, চলন ইত্যাদি কাজে অংশ নেয়।
বাসস্থান: পৃথিবীর প্রায় সকল অঞ্চলে এই পর্বের প্রাণী দেখা যায়। এদের অধিকাংশ প্রজাতি সামুদ্রিক। তবে অনেক প্রজাতি খাল, বিল, নদী, হ্রদ, ঝর্ণা ইত্যাদিতে দেখা যায়। এই পর্বের প্রাণীগুলো বিচিত্র বর্ণ ও আকার আকৃতির হয়। এদের কিছু প্রজাতি এককভাবে আবার কিছু প্রজাতি দলবদ্ধভাবে কলোনি গঠন করে বাস করে। এরা সাধারনত পানিতে ভাসমান কাঠ, পাতা বা অন্য কোনো কিছুর সঙ্গে দেহকে আটকে রেখে বা মুক্তভাবে সাঁতার কাটে।
উপকারিতা: হাইড্রার কোন উপকারিতা নেই।
অপকারিতা: হাইড্রা বিভিন্ন ধরনের জলজ অমেরুদন্ডী প্রাণী খেয়ে ফেলে।
২. চিংড়ি- আর্থ্রোপোডা
বৈশিষ্ট্য:
১. দেহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিভক্ত ও সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গ বিদ্যমান।
২. মাথায় একজোড়া পুঞ্জাক্ষি ও এন্টেনা থাকে।
৩. নরম দেহ কাইটিন সমৃদ্ধ শক্ত আবরণী দ্বারা আবৃত।
৪. দেহের রক্তপূর্ণ গহ্বর হিমোসিল নামে পরিচিত।
বাসস্থান: এই পর্বটি প্রাণীজগতের সবচেয়ে বৃহত্তম পর্ব। এরা পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র সকল পরিবেশে বাস করতে সক্ষম। এদের বহু প্রজাতি অন্তঃপরজীবী ও বহিঃপরজীবী হিসেবে বাস করে। বহু প্রাণী স্থলে, স্বাদু পানিতে ও সমুদ্রে বাস করে।
উপকারিতা: চিংড়ি মাছ আমাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করে থাকে।
অপকারিতা: কারো কারো ক্ষেত্রে চিংড়ি মাছ খেলে এলার্জি জনিত সমস্যা হতে পারে।
৩. ফিতা কৃমি- প্লাটিহেলমিনথেস
বৈশিষ্ট্য:
১. দেহ চ্যাপ্টা, উভলিঙ্গ।
২. বহিঃ পরজীবী বা অন্তঃপরজীবী।
৩. দেহ পুরু কিউটিকল দ্বারা আবৃত থাকে।
৪. দেহে চোষক ও আংটা থাকে।
৫. দেহে শিখ অঙ্গ নামে বিশেষ অঙ্গ থাকে, এগুলো রেচন অঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
৬. পৌষ্টিকতন্ত্র অসম্পূর্ন বা অনুপস্থিত।
বাসস্থান:
এ পর্বের প্রাণীদের জীবনযাত্রা বেশ বৈচিত্র্যময়। এ পর্বের বহু প্রজাতি বহিঃপরজীবী বা অন্তঃপরজীবী হিসেবে অন্য জীব দেহের বাইরে বা ভিতরে বাস করে। তবে কিছু প্রজাতি মুক্তজীবী হিসেবে স্বাদু পানিতে, আবার কিছু প্রজাতি লবণাক্ত পানিতে বাস করে। এই পর্বের কোন কোন প্রাণী ভেজা ও স্যাঁতসেঁতে মাটিতে বাস করে।
উপকারিতা: ফিতাকৃমির কোন উপকারিতা নেই।
অপকারিতা: ফিতাকৃমির দেহে বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা ইত্যাদি সৃষ্টি করতে পারে।
৪. ঝিনুক- মলাস্কা
বৈশিষ্ট্য:
১. দেহ নরম। নরম দেহটি সাধারণত শক্ত খোলস দ্বারা আবৃত থাকে।
২. পেশিবহুল পা দিয়ে চলাচল করে।
৩. ফুসফুস বা ফুলকার সাহায্যে শ্বাসকার্য চালায়।
বাসস্থান: এ পর্বের প্রাণীরা পৃথিবীর প্রায় সকল পরিবেশে বাস করে। প্রায় সবাই সামুদ্রিক এবং সাগরের বিভিন্ন স্তরে বাস করে। কিছু কিছু প্রজাতি পাহাড়ি অঞ্চলে, বনেজঙ্গলে ও স্বাদু পানিতে বাস করে।
উপকারিতা: সবুজ ঝিনুক পেশী, টিস্যু ও কোষকে চাঙ্গা করে তোলে; যা স্নায়ুর বিকাশে সহায়ক। অ্যাজমা রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ঝিনুকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় এটি বাতের ব্যথা ও শরীরের স্টিফনেস বাড়াতে সহায়ক। দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে ঝিনুক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অপকারিতা: পাচনতন্ত্র এবং প্লীহা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ঝিনুকে মারাত্মক ধরনের সমস্যা হওয়ার ভয় থাকে।
৫. তারামাছ- একাইনোডারমাটা
বৈশিষ্ট্য:
১. দেহত্বক কাঁটাযুক্ত
২. দেহ পাঁচটি সমান ভাগে বিভক্ত।
৩. পানি সংবহনতন্ত্র থাকে এবং নালিপদ এর সাহায্যে চলাচল করে।
৪. পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে অঙ্কীয় ও পৃষ্ঠদেশ নির্ণয় করা যায় কিন্তু মাথা চিহ্নিত করা যায় না।
বাসস্থান: এই পর্বের সকল প্রাণী সামুদ্রিক। পৃথিবীর সকল মহাসাগরে এবং সকল গভীরতায় এদের বসবাস করতে দেখা যায়। এদের স্থলে বা মিঠা পানিতে পাওয়া যায় না। এরা অধিকাংশ মুক্তজীবী।
উপকারিতা: নেই।
অপকারিতা: শিকারি প্রকৃতির হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের ঝিনুকজাতীয় প্রাণী এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী খেয়ে ফেলে।
কর্ডাটা:
এরা পৃথিবীর সকল পরিবেশে বাস করে। এদের বহু প্রজাতি ডাঙ্গায় বাস করে। জলচর কর্ডাটাদের মধ্যে বহু প্রজাতি স্বাদু পানিতে অথবা সমুদ্রে বাস করে। বহু প্রজাতি বৃক্ষবাসী, মরুবাসী, মেরুবাসী, গৃহাবাসী ও খেচর। কর্ডাটা পর্বের বহু প্রাণী বহিঃপরজীবী হিসেবে অন্য প্রাণীর দেহে সংলগ্ন হয়ে জীবনযাপন করে।
বৈশিষ্ট্য – এই পর্বের প্রাণীর সারা জীবন অথবা ভ্রুণ অবস্থায় পৃষ্ঠদেশ বরাবর অবস্থান করে। নটোকর্ড হল একটি নরম, নমনীয় ও অখণ্ডিত অঙ্গ। পৃষ্ঠদেশে একক, ফাঁপা স্নায়ুরজ্জু থাকে।
সারা জীবন অথবা জীবন চক্রের কোনো এক পর্যায়ে পার্শ্বীয় গলবিলীয় ফুলকা ছিদ্র থাকে।
৬. রুই মাছ- অসটিকথিস
বৈশিষ্ট্য ও বাসস্থান :
১. অধিকাংশই স্বাদু পানির মাছ।
২. দেহ সাইক্লয়েড, গ্যানয়েড বা টিনয়েড ধরনের আঁইশ দ্বারা আবৃত।
৩. মাথার দুই পাশে চার জোড়া ফুলকা থাকে। ফুলকাগুলো কানকো দিয়ে ঢাকা থাকে। ফুলকার সাহায্যে শ্বাসকার্য চালায়।
উপকারিতা: রুই মাছ আমাদেরকে অর্থনৈতিক ভাবে সাহায্য করে।
অপকারিতা: অতিরিক্ত মাছ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে শরীরে ভাইরাস আক্রান্ত হতে পারে হতে পারে রোগ সংক্রমণ।
৭. বিড়াল- স্তন্যপায়ী
বৈশিষ্ট্য ও বাসস্থান:
১. দেহ লোমে আবৃত।
২. স্তন্যপায়ী প্রাণীরা সন্তান প্রসব করে। তবে এর ব্যতিক্রম আছে, যেমন-প্লাটিপাস।
৩. উষ্ণ রক্তের প্রাণী।
৪. চোয়ালে বিভিন্ন ধরনের দাঁত থাকে।
৫. শিশুরা মাতৃদুগ্ধ পান করে বড় হয়।
৬. হৃৎপিন্ড চার প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট।
উপকারিতা: বিড়াল ঘরের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাহায্য করে।
অপকারিতা: বিড়ালের আঁচড়ে, কামড়ে বিভিন্ন রকমের রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
৮. কাক- পক্ষীকূল
বৈশিষ্ট্য ও বাসস্থান:
১. দেহ পালকে আবৃত।
২. দুটি ডানা, দুটি পা ও একটি চঞ্চু আছে।
৩. ফুসফুসের সাথে বায়ুথলী থাকায় সহজে উড়তে পারে।
৪. উষ্ণ রক্তের প্রাণী।
৫. হাড় শক্ত, হালকা ও ফাঁপা।
উপকারিতা: কাক পরিবেশের ময়লা-আবর্জনা খেয়ে পরিবেশকে দূষণমুক্ত করে।
অপকারিতা: কাক মানুষের উৎপাদিত বিভিন্ন ফল, গাছ খেয়ে নষ্ট করে।
বন্ধুরা এই ছিল তোমাদের জন্য ৮ম শ্রেণির ৪র্থ এ্যাসাইনমেন্ট বিজ্ঞান বিষয়ের বিভিন্ন প্রাণীর বৈশিষ্ট্য ও বাসস্থান এবং পরিবেশে তাদের প্রভাব নির্ধারিত কাজ এর নমূনা উত্তর।
অষ্টম শ্রেণির ৪র্থ এ্যাসাইনমেন্ট এর অন্যান্য বিষয়ের উত্তর:
- বিজ্ঞানঃ বিভিন্ন প্রাণীর বৈশিষ্ট্য ও বাসস্থান এবং পরিবেশে তাদের প্রভাব
- চারু ও কারুকলাঃ গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে কারুশিল্পের ব্যবহার এবং তার নান্দনিক দিক
প্রতিসপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট এবং অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত যেকোন সহযোগিতা পেতে নিচের Download From PlayStore বাটনে ক্লিক করে বাংলা নোটিশ ডট কম এন্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে নাও।